Bangla Golpo 2020 (শত্রুতা-আয়েশা-পর্ব-৩) Bengali Story

শত্রুতা
পর্ব-৩
লিখা-আয়েশা


রিয়া খুব ভয় পাচ্ছে।বাংলাদেশই রক্ষা পাওয়া যায় না আর এখানে ঐ মাতালরা যদি ওকে ধরে ফেলে ও কি করবে ভাবতে পারছে না ভয়ে দৌড়াতেও পারছে না।আর ও কিছু চিনেও না।দৌড়ে কোথায় যাবে
পিছন দিকে না তাকিয়ে সামনে এগুতে থাকল।

এর মধ্যে পিছন থেকে কে যেন হাত ধরল।
রিয়া ভয়ে চুপসে গেল।সাহস করে বললো
ছাড়ুন
বলে পিছনে তাকিয়ে ভয়টা কমে গেল।
এ যে রিফাত
তার মানে ওর মনে ঠিকই জায়গা আছে কিন্তু প্রকাশ করে না।ওর হাত ধরে টেনে বাসায় নিয়ে গেল ।

রিয়া ভয়ে কাঁপছে।কোন কথা বেরচ্ছে না।বাইরে স্নো ফল হচ্ছিল তাই ঠান্ডায় এমন করছে রিয়া।রিয়াকে চাদর দিয়ে চেপে ধরেছে যাতে শরীরটা জলদি গরম হয়ে যায় ।রিয়া ঠান্ডায় জড়িয়ে ধরল।রিফাত ও রিয়ার পিঠে হাত বুলিয়ে দিল।রিয়া বলল
__তুমি কি করে আমাকে এতো রাতে বের করে দিতে পারলে।যদি কিছু হয়ে যেত। ওরা যদি আমার ক্ষতি করতো।

__আমি থাকতে তোর ক্ষতি অন্য কেউ করবে তা হতে পারে না।
রিয়া রিফাতের পা জড়িয়ে ধরল প্লিজ বলো আমার অপরাধ কি?কেন আমাকে বিয়ে করে এতো কষ্ট দিচ্ছো।
__তোকে তিল তিল করে মারার জন্য।তোকে যত কষ্ট দেই ততই আমার শান্তি।
__আমার অপরাধটা কি?

তোকে কতবার যে আমার মেরে ফেলতে মন চায় কিন্তু তোর মুখের দিকে তাকালে কেমন যেন মায়ায় পরে যাই।কারন প্রথম দেখায় তোকে আমার ভালো লেগে যায়।আবার ঐ মুখের দিকে তাকালে আমার ঘৃনাও বেড়ে যায়।তবুও শুনতে চাইছিস যখন শোন,

__আমার বাবা মা ছোটবেলায় মারা গেছে। একটা ছোট বোন আমার হাতে তুলে দিয়ে গেছে।ওর নাম রায়না।চাচির বাসায় থাকি চাচি দুমুঠ একমুঠ যা দেয় তাই খাই।আমি চাচার বাসায় থেকে টিউশনি করে নিজেও পড়াশোনা করেছি ওকেও পড়িয়েছি।হঠাৎ ভাগ্যক্রমে ডিবির লটারি পেয়ে এখানে আসার সুযোগ হয়।ভাবছিলাম বোনকে এখানে নিয়ে আসবো।
কিন্তু তা আর হলো না।

এক ঝড় এসে সব লন্ডভন্ড হয়ে গেল।রায়না নরম স্বভাবের ছিল।অল্পেই কাউকে বিশ্বাস করে ফেলতো।রায়না যখন আই এ ফাস্ট ইয়ারে পড়ে তখন নাকি এক ছেলের সাথে রিলেশন হয়।ঐছেলে ওকে অনেক বড় ধোঁকা দেয়।রায়নার অশ্লীল পিক অনলাইনে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয় ।এটা শুনে রায়না সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে।

একথা বলে রিফাত অনেক কান্নাকাটি করে।রিয়া ওর কাছে গিয়ে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করে ।রিফাত ওর হাত সরিয়ে দিয়ে বলে তুই জানিস সেই ছেলে কে?
ঐ ছেলে আর কেউ নয়
"তোর ভাই"রিয়াদ
__কি বলছো এসব আমার ভাই এক্সিডেন্টে মারা গেছে।__হুম এই কান্ড করার পর আল্লাহ্ ও সহ্য করতে পারেনি।তাই তো তোর ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে তবে আমার আশা ছিল নিজ হাতে তোর জানোয়ার ভাইকে শেষ করার তা হলো না।
সেদিনই শপথ করেছি ওকে পাইনি ওর ছোট বোনকে দিয়েই সেই সাধ পূরন করবো।তিল তিল করে শেষ করবো তোকে বুঝলি।
কয়েকটা চড় দিয়ে বললো যা আমার চোখের সামনে থেকে যাহ্।এখন আমাকে একা থাকতে দে,

রিয়া কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল।এদিকে রিফাত ও অনেক কাঁদছে ছোট্ট বোনটির জন্য,

সকালে মাথাটা ভার হয়ে আছে রিফাতের। অনেক কেঁদেছে তাই হয়তো।
__এই রিয়া এক কাপ চা দে তো।
অনেক সময় হলো কোন উত্তর এলো না।

রিফাত বিছানা ছেড়ে লাফ দিয়ে উঠল।সারা বাড়িতে খুজলো কোথাও রিয়া নেই।
রুপার কাছে কল দিয়ে বললো
__ আপু রিয়া আছে আপনার ওখানে।
__না তো ও তো চিনেই না এখানে আসবে কি করে।
আচ্ছা আচ্ছা আমি খুঁজে দেখছি।রিফাতের মাথা ঘুরাচ্ছে কিচ্ছু চিনে না
কোথায় গেল মেয়েটা।.....................................

Part-4