Bangla Story (শত্রুতা - আয়েশা - পর্ব-২) Bangla Golpo

Bangla Story (শত্রুতা - আয়েশা - পর্ব-২) Bangla Golpo

শত্রুতা
পর্ব-২
লিখা-আয়েশা


পৌছে গেল ওরা,
চলে এল আমেরিকা
খুব সুন্দর রাস্তাঘাট খুব পরিস্কার কোন জ্যাম নেই।

রিফাতের বাড়িটাও খুব সুন্দর।দুটো বেড রুম।বড় একটা রান্নাঘর রিয়ার খুব ভালো লাগল সবকিছু।
রিয়া ফ্রেশ হয়ে নুডলস রান্না করলো।রিফাতকে খাওয়ার জন্য ডাকতে গেল যা দেখল,
ওর মাথা ঘুরে গেল।

রিয়ার ছবিতে রিফাত একটা একটা করে তীর ছুড়ছে....

রিয়া হতবাক হয়ে গেল তাহলে কি রিফাত তাকে খুন করতে চায়।এই দূর দেশে ওকে মেরে ফেললেও কেও জানবে না।কিন্তু কেন এত ঘৃণা রিয়ার উপর ও জানতেই পারল না।রিয়া দরজা নক করল

__খেতে আসেন

__তুই খেয়ে শুয়ে পর।আমার চিন্তা তোর করতে হবে না

রিয়ার মুখ দিয়ে খাবার গলায় নামছে না।তারপরেও অল্প একটু খেয়ে বিছানায় শুয়ে পরল।রিফাত আস্তে আস্তে একটা বালিশ নিয়ে রিয়ার মুখের উপর ধরে চাপ দিল রিয়ার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।ও খুব হাত পা ছড়াছড়ি করছে সেদিকে রিফাতের কোন খেয়াল নেই।

রিয়া লাফ দিয়ে উঠল।
ওহ্ স্বপ্ন ছিল।রিয়া উঠে এক গ্লাস পানি খেল।
হঠাৎ কান্নার শব্দ শুনতে পেল,
গিয়ে দেখল রিফাত কাঁদছে
রিয়া কিছুই বুঝল না।
কেন ওর সাথে বাজে ব্যবহার করছে আর এখন কেনই বা কাঁদছে।রিয়া আবার শুয়ে পরলো।এক ঘুমে সকাল।জানালা দিয়ে বাহিরের আকাশ দেখছে।কত স্বপ্ন ছিল আমেরিকা আসবে স্বামীর সাথে কত ইনজয় করবে ঘুরে বেড়াবে কিন্তু তা আর হলো না।উল্টো সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় কখন ওকে রিফাত মারতে এসে পড়ে।

রিফাত উঠে গেছে, ও শাওয়ার নিচ্ছে।রিয়া একটা কালো শার্ট বের করে বিছানায় রাখল।
নাশতা রেডি করতে লাগল।

রিফাত ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে শার্ট দেখে রাগ হলো ওর এত বড় সাহস আমি কি পড়বো তা ও বলে দেবে নাকি।তারপর কিছু একটা ভেবে ঐ শার্ট টা হাতে নিল।

রিয়া দেখে খুব খুশি হলো,
রিফাত সেই শার্টটা পড়েছে।খুব সুন্দর লাগছে ওকে।মুখটা খুব রাগী রাগী।দেখেই ভয় পায় রিয়া।কিন্তু মনে মনে পছন্দ ও করে খুব।নাশতা খাচ্ছে ওরা
এর মধ্যে কলিং বেল বেজে উঠল।রিফাত গেল দরজা খুলতে।রিয়ার বড় বোন রূপা এসেছে। রিফাত কিছুটা বিরক্ত হলো কিন্তু বুঝতে দিল না।হাসিমুখে কথা বললো
রিয়াকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিল ওর বোন,

__কতদিন পর দেখা তোর সাথে আজ পাঁচ বছর হতে চলল।বাবা মা কেমন আছে রে।

__ভালই আছে আপু তুই কেমন আছিস তাই বল।__আছিরে ভালই।

__আচ্ছা আপি চল বেড রুমে গিয়ে কথা বলি

__হুম চল।এই তোমরা দুজন এখানে গল্প করো, রিফাত আর নিখিলকে বললো।রুমে গিয়ে শুয়ে শুয়ে কথা বলতে থাকল,

__আচ্ছা আপি তুই কত দিন যাবৎ চিনিস রিফাত কে

__পাঁচ বছর ধরেই।এখানে এসেই পরিচয়।আমাদের বাসায় খুব যেত।তোর ভাইয়া বিয়ের কথা বলতেই বললো আপনার সেলিকাকে করলে কেমন হয়।নিখিল ওকে অনেক দিন ধরে চেনে।আমাদের বিয়েতে ও নাকি গিয়েছিল তখনই তোকে দেখছে।আমিও দেখলাম ভালো ছেলে আগে পিছে কেউ নেই।বাবা মা মরে গেছে ছোটবেলায়।
চাচা চাচির কাছে মানুষ।ডিবির লটারি পেয়ে আমেরিকায় আসতে পেরেছে।কেন রে?

রিয়া কিছু বলার আগেই রিফাত বললো,

__এই শুনে যাও।রিয়া কাছে গেলে ওর হাত ধরে অন্য রুমে নিয়ে গিয়ে বলল,
__এই শোন,ওরা যেন কিছু বুঝতে না পারে।ওদের সামনে তুমি করে কথা বলবি।

__আচ্ছা বলবো বলবো
ব্যথা পাচ্ছি হাত ছাড়ুন।

রিয়া হাত ডলতে ডলতে রুপার কাছে আসল।কথা এড়িয়ে অন্য অনেক গল্প করলো।দু বোন মিলে রান্না করলো।সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া করলো।রূপা বললো
__ আমরা দু বোন একসাথে ঘুমাব।
রিফাত একটু ভয় পেয়ে বললো
__কেন আপু।
__অনেক দিন পর আমরা একত্রে।তুমি কিছু মনে করো না প্লিজ।আর একদিন বৌকে ছাড়া ঘুমালে কি হবে।
রিফাত লজ্জা পেল,
চোখ দিয়ে ইশারা করে বললো কিছু যাতে না বলে।রিয়াও ভয় পেয়ে কিছু বললো না।

পরের দিন বিকেলে ওরা সবাই ঘুরতে বের হলো।অনেক আনন্দ করল।রিয়ার মনে হচ্ছে রিফাত ঠিক হয়ে গেছে।ওখান থেকে রুপারা ওদের বাসায় চলে গেল।

রিয়া রিফাত ও বাসায় চলে আসলো।বাসায় এসেই রিয়ার হাত ধরে জোরে টান দিয়ে বললো
__ কি বলেছিস তোর বোনের কাছে।
__আমি কিছুই বলিনি।সত্যি বলছি।
রিফাত চড় মারার জন্য হাত উঠাতেই রিয়া ধরে ফেলল

__আর একটা আঘাত আপনি আমাকে করবেন না।অনেক সহ্য করেছি এ কদিনে।নিরাপরাধ ভাবে আমাকে এতো মারতে পারবেন না।
__তোর অনেক সাহস হয়েছে তাই না
বড় বোন আসছিল তাই।তুই আমার হাত ধরিস।

এই বলে রিয়াকে অনেকগুলো চড় দিল,বললো বের হয়ে যা আমার বাসা থেকে।ওকে ঘর থেকে বের করে দিল।বের করে দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল।

রিয়া অনেক কান্না করতেছে আর আস্তে আস্তে হাঁটছে কই যাবে এতো রাতে।ওর খুব ভয় করছে অচেনা অজানা দেশ তাও আবার একা একা।

রাস্তার দিকে এগোতেই দেখে কয়েকটা লোক মাতালের মতো আসছে ঐ রাস্তায়।রিয়া ওদের দেখে ভয় পেয়ে জোরে জোরে এগোতে থাকল।ঐ লোকগুলোও রিয়ার পিছন পিছন আসতে লাগল,

রিয়া খুব ভয় পাচ্ছে।বাংলাদেশই রক্ষা পাওয়া যায় না আর এখানে।ঐ মাতালরা যদি ওকে ধরে ফেলে ও কি করবে ভাবতে পারছে না ভয়ে দৌড়াতেও পারছে না।আর ও কিছু চিনেও না দৌড়ে কোথায় যাবে..............

Part - 3

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url