Golpo (শত্রুতা - আয়েশা) Bangla Story | Bangla Golpo

(আস্ সালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই।আশা করি সবাই ভালো আছেন অনেক দিন পর লিখলাম।এতদিন অনেক ব্যস্ত ছিলাম।আশা করি সবাই আগের মতোই পাশে থাকবেন)

শত্রুতা
পর্ব-১
লিখা-আয়েশা


বিয়ের আগেই ফিজিক্যাল রিলেশন করতে হবে এটা কেমন কথা।বাবা মাও আপত্তি করছে না।ওনারা বলছে কদিন পরেই তো বিয়ে।কথাটা রিফাত ঐভাবে বলেনি

বলেছে আবাসিক হোটেলে যেতে হবে রিয়াকে।রিফাত আমেরিকার সিটিজেন ও যেই হোটেলে উঠেছে ঐ হোটেলে রিয়ার যেতে হবে।রিয়ার খুব খারাপ লাগছে ওর লাইফে একটাও ছেলের সাথে কোন রিলেশনে জড়ায় নি,কারন ও ওর পরিবারের বিপক্ষে বিয়ে করবে না।আর আজ বাবা মার পছন্দ করা ছেলেই এই কথা বলছে,

এটা কেমন কথা হলো কদিন পরেই বিয়ে তো আজ কি জন্য যেতে বলছে।আজকাল বাঙালী ছেলেরাই দুদিন প্রেম করলেই রুমডেট করতে চায় আর সে তো দশ বছর আমেরিকায় ছিল।

রিফাত রিয়ার বড় বোনের বরের বন্ধু।আপুর বিয়ের সময়ই নাকি রিয়াকে দেখে রিফাতের খুব ভালো লেগে যায়।এই তো কয়েক মাস আগেই বিয়ের কথা পাকাপাকি হলো।
বড় আপু খুব খুশি রিয়ার বিয়ে হলে দু বোন একসাথে থাকতে পারবে।প্রবাসী জীবন অনেক কষ্টের কোন আপন লোক নেই,যে যার মতো থাকে,তাই ছোট বোনটা পাশে থাকলে ভালো হবে।
বড় আপুও বলছে যা কিছু হবে না দুদিন পর তো বিয়ে হচ্ছেই।আর তুই সব ব্যপারে একটু বেশি ঘাবড়ে যাস।

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রিয়া ভাবছে
এ কেমন জীবন তার এমন কেন করলো ছেলেটি কেনই বা ডাকল হোটেলে,নাকি ওর সর্বশ্য কেড়ে নিয়ে ওকে ছুড়ে ফেলে দিবে।যে কারণে আজ পর্যন্ত কারোর প্রেমে সাড়া দেই নি আজ সেই কারন তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে।জানি না কি আছে কপালে রিয়া বললো,
আলমারি খুলে একটা শাড়ি বের করলো

একটা নীল শাড়ি,সঙ্গে মেচিং করে সব পড়ে নিল।ভালোই লাগছে আয়নায় দেখতে রিয়াকে একটা মুচকি হাসি দিতেই পরক্ষণে ভয় করতে লাগল কি হয় না হয়

পরে বাবা মায়ের কাছে বিদায় নিয়ে চললো হোটেলের উদ্দেশ্যে।গাড়ি থেকে নেমে হোটেলের ভিতর ঢুকলো।লিফটে করে সোজা দশ তলায় চলে গেল।রুমের কলিংবেল বাজাতে গিয়ে রিয়ার হাত কাপছিল।অনেক ভয় করছিল।

বেল দেয়ার আগেই দরজা খুলে গেল।রিফাত বললো __ওয়েলকাম রিয়া
__আপনি আমাকে আসতে বলেছিলেন
__হা ভিতরে আসেন
রিয়া ভিতরে গেল আর লক্ষ করলো
রিফাত Do not Disturb বোর্ড লাগিয়ে দিচ্ছে।রিয়ার বুক আরও ধুকধুক শুরু করলো।

রিফাত বলে উঠল
__ আপনি ঘামছেন কেন।
__রিয়া বললো কই না তো
__নার্ভাস হওয়ার কিছু নেই,আমরা হবু স্বামী স্ত্রী
কি খাবেন তাই বলুন।
__জী আমি কিছুই খাবো না।
__কোল্ড ড্রিঙ্কস নিন।

কোকের বোতল হাতে নিয়ে রিয়া সোফায় বসল।রিফাত ওর কাছাকাছি আসছে
একি একদম ঠোঁটের কাছাকাছি এগোচ্ছে
রিয়া চোখ বন্ধ করে ফেললো .........

আর অমনি হা হা করে হেসে উঠলো রিফাত
__আমাকে অতটা নিচ ভাববেন না।আমি মেয়েদের সম্মান করতে জানি।আপনি তখনই পুরোপুরি আমার হবেন যখন কালিমা পড়ে আমাদের বিয়ে হবে।আসলে আপনাকে চমকে দিতে এভাবে আসতে বলা।আমেরিকায় থেকেছি অনেক বছর আমাকে কেমন ভাবেন তা জানার জন্য এসব করা।আপনার বাবা মাও জানে এ ব্যপারটা।
আপনি অনেক আনইজি ফিল করছেন,ওকে চলুন এখন যাওয়া যাক।

রিয়া উঠে দরজা খুলতে যাবে এমন সময় হাত ধরে এক টানে রিফাতের বুকের সামনে নিয়ে আসলো।রিয়ার হার্টবিট বেড়ে গেল।

রিফাত রিয়ার চুলগুলো সরিয়ে ওর ঘাড়ে ঘন ঘন নিশ্বাস নিচ্ছে,রিয়ার নিশ্বাস যেন থেমে আসছে,

কিছুক্ষণ পর
একটা ডায়মন্ডের হার পরিয়ে দিল,
রিয়া তো অবাক,ভাবলো কি আর হলো কি
একটা থ্যাংকস দিয়ে দৌড়ে চলে এলো।

বাসায় এসে আয়নায় নিজেকে দেখছে ভালোই মানিয়েছে।রিফাতকে যতোটা বাজে ভেবেছিল তা নয় বরং ওর এই রোমান্টিকতা রিয়াকে মুগ্ধ করেছে।ওকে ভালোওবেসে ফেলেছে।

বিয়ের দিন চলে আসলো
বিয়েও হলো
বাসর রাত
রিয়া অপেক্ষা করছে তার স্বামীর জন্য।যার সাথে তার একটু আগে বিয়ে হয়েছে।রিয়া চায় একজন পারফেক্ট ওয়াইফ হতে।অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করছে কিন্তু সে আসছে না।

রিফাত এলো রুমে কিছুই বললো না।

রিয়া অনেক সময় অপেক্ষা করে বললো
__ আপনার শরীর ঠিক আছে তো?
কপালে হাত দিতে যাবে এমন সময়
ঠাস করে একটা চড় দিল।রিয়া হতবাক।রিয়ার দুই গাল জোরে চাপ দিয়ে বললো
__কোন ঢং করবি না,বেশি বৌ হওয়ার চেষ্টা করবি না
আমরা কাল রাত আটটার ফ্লাইটে আমেরিকা যাবো।
__আপনি আমাকে মারছেন কেন,
__ইচ্ছে হয়েছে মারবো,
__ না আমি যাবো না আপনার সাথে
__তোর বাপ যাবে।

চুলের মুঠি ধরে বিছানায় ফেলে দিল বললো
__এই কথা যদি কেউ জানতে পারে তবে তোর খবর আছে।যাওয়ার জন্য তৈরী থাকবি বুঝলি।
রিয়া কিছুই বুঝলো না রিফাত কেন এমন করছে।কেনই বা এতোকঠোর আচরণ।সারারাত কাঁদতে থাকল।
সকাল হলো সারাদিন কারোর সাথে কথা বললো না ওর মন খুব খারাপ কার সাথে বিয়ে হলো।

রিয়ার মুখ ভার দেখে মা অনেকবার জানতে চেয়েছেন কিন্তু রিয়া কিছু বলে নি।কারন একথা শুনলে বাবা অনেক কষ্ট পাবেন এমনেই উনার হার্টের অসুখ। ফ্লাইটের সময় হয়ে গেছে।সবাই এয়ারপোর্টে গেল।বাবা মার খুব মন খারাপ দুটো মেয়েই প্রবাসী হয়ে গেল।

প্লেনে উঠবার সময় খুব কান্না পাচ্ছিল রিয়ার। এ কোন মানুষের সাথে দেশ পার করছে।যে কিনা বাসর রাতেই তাকে মারধর করে।

পৌছে গেল ওরা,
চলে এল আমেরিকা
খুব সুন্দর রাস্তাঘাট খুব পরিস্কার কোন জ্যাম নেই।

রিফাতের বাড়িটাও খুব সুন্দর।দুটো বেড রুম।বড় একটা রান্নাঘর রিয়ার খুব ভালো লাগল সবকিছু।
রিয়া ফ্রেশ হয়ে নুডলস রান্না করলো।রিফাতকে খাওয়ার জন্য ডাকতে গেল যা দেখল,
ওর মাথা ঘুরে গেল।

রিয়ার ছবিতে রিফাত একটা একটা করে তীর ছুড়ছে..................

Part - 2