Bangla Love Story, valobashar golpo, bangla romantic golpo, heart touching sad love story in bangla, bangla sad love story, bangla romantic love story, bangla valobashar golpo, bengali sad love story, sad story bangla, bengali love story shayari, bangla romantic story, sad story bengali, valobashar romantic premer golpo bangla
Bangla Love Story (স্বার্থহীন ভালোবাসা!)


 স্বার্থহীন ভালোবাসা!


ছাদে বসে সিগারেট টানছে জাহেদ,
জীবনে এই প্রথম সিগারেট হাতে তার,
তাও একটা মেয়ের কারনে।
মেয়েটার নাম ইমা।এক বছর সম্পর্ক
ছিলো তাদের,
সে খুব ভালোবাসতো তাকে , তাকে
নিয়ে অনেক রঙিন রঙিন স্বপ্ন
দেখতো।
কিন্থু হঠাৎ করে সে তার সাথে
ব্রেকঅাপ করে, কোন কারন ছাড়াই।
সে যখন তাকে জিজ্ঞেস করে
কেনো
ব্রেকঅাপ করলে।
ইমা তখন বলে,তোমার সাথে সম্পর্ক
রাখা অামার পক্ষে সম্ভব না,কারন
অামি যেমন ছেলে চাই তুমি সেই
টাইপের ছেলে না। অামার জীবনের
সাথে তোমার জীবনের কিছুর মিল
দেখছি না। তোমার সাথে অামার
চলবে না।
তখন সে বললো , অামিতো
তোমাকে
প্রথম ভালোবাসার কথা বলি নাই, তুমি
নিজে প্রথম অামার সম্পকে সব
জেনে
শুনে অামাকে ভালোবাসি
বলছিলে। অার এখন সম্পর্ক হবার এক বছর
পর বলছো, তুমি যেমন ছেলে পছন্দ
করো
অামি তেমন ছেলে না , অামার
সাথে তোমার চলবে না।
অামার সাথে যদি তোমার না চলে,
তাহলে এক বছর অাগে ভালোবাসি
বলছিলে কেনো। তোমার সাথে
অামার চলবে না এই কথটা এক বছর
অাগে বলা উচিত ছিলো।
এই কথা বলার পর,ইমা তাকে অনেক
অাজে বাজে কথা বলে,তার সাথে
কোন যোগাযোগ করতে মানা করে,
সে নাকি অন্য একটা ছেলে কে
ভালোবাসে।
সে তাকে বিয়ে করবে
---
জাহেদ যখন ছাদে বসে সিগারেট
টানছিলো ।
তখনই তার মোবাইলটা বেজে উঠলো ,
মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে
ইমরোজের কল ।
ইমরোজ হলো তার ফেসবুক ফ্রেন্ড
,
ফেসবুকে তাদের প্রথম পরিচয় হয়,
তারপর
বন্ধুত্ব হয় , এরপর মোবাইলে তাদের
মাঝে মাঝে কথা হয় । সে ইমার সম্পকে
সবকিছু বলছে তাকে, কখন কি হতো
সবকিছু ইমরোজের সাথে শেয়ার করত
----
সে কলটা রিসিভ করে হ্যালো বলে ।
ইমরোজ তখন জিজ্ঞেস করে ,
কেমন
আছেন আপনি ,কি করছেন ।
সে বলে , সিগারেট পান করছি ।
কথাটা শুনে ইমরোজ অবাক হয়ে যায় ।
কারণ সে জানে জাহেদ কখনো
সিগারেট পান করে না । তাই সে
কৌতুহল নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করে ,
আপনি আমাকে বলছিলেন আপনি
নাকি সিগারেট কখনো পান করেন না
। কিন্তু তাহলে আজকে কেনো
আপনার
হাতে সিগারেট ।
তারপর জাহেদ ,ইমার সাথে ব্রেকঅাপ
হয়ে যাওয়ার ঘটনাটা তার সাথে
শেয়ার করে । ।
---
সবকিছু জানার পর ইমরোজ তাকে
বুঝানোর চেষ্টা করে । দেখেন ইমা
অাপনাকে ভালোবাসে নাই,
কোন দিন আপনাকে ভালোবাসবে না
। যে মেয়ের কাছে আপনার
ভালবাসার মূল্য নাই, আপনার
ফিলিংসের মূল্য নাই ।
সেখানে অাপনি কেন সেই মেয়েটা
টার জন্য মন খারাপ করবেন, নিজেকে
কষ্ট দিবেন। সুন্দর জীবন টাকে
কেনো
একটা মেয়ের কারনে নষ্ট করবেন ।
সে যদি অাপনাকে ভুলে থাকতে
পারে। তাহলে অাপনি কেনো
পারবেন না থাকে ভুলে থাকতে।
জীবন তো একটাই সেটাকে সাজাতে
শিখুন রাঙাতে শিখুন ।
---
এরপর থেকে প্রতিদিন ইমরোজ তাকে
কল করতো । সকাল বিকাল সবসময় তার
খোঁজ খবর নিতো ।
তার একজন ভালো বন্ধু হয়ে , তার পাশে
থেকে
তার জীবনে ইমার অভাবটা দূর করার
চেষ্টা করত ।
এভাবেই একটা বছর পার হয়ে যায় ।
------
এক বছর পর হঠাৎ একদিন ইমরোজ বলে
তার
সাথে দেখা করার জন্য ।
সে তখন বলে, দেখা করতে হবে
কেনো
ইমরোজ বলে , আপনার সাথে আমার
কিছু কথা বলার আছে । ইচ্ছে করলে
ফোনে বলতে পারি , কিন্তু আমি তা
করব না, আমি আপনার সামনে এসে
সরাসরি কথা গুলো বলতে চাই ।
এরপরে জাহেদ ও রাজি হয়ে যায
দেখা করার জন্য ।।
পরের দিন বিকালে ইমরোজের
দেওয়া
ঠিকানা মতো পৌছে যায়। ইমরোজ
যে পার্কে অাসতে বলে সেই
পার্কে
গিয়ে দেখে ইমরোজ শাড়ী পরে
এসেছে।পড়নে
নীল শাড়ী, কপালে নীল টিপ, হাতে
নীল চুড়ি, কানে নীল দুল , সবই নীল
কালারের ।তার বুঝতে বাকি রইলো
না কেনো সে নীল কালারের এই সব
পড়ে এসেছে। কারন
জাহেদের প্রিয় রং হচ্ছে নীল।তবে
নীল শাড়ীতে সত্যিই অপূর্ব
লাগছিলো
ইমরোজকে ।
তারপর দুইজনে পার্কের এক কোনায়
বসলো।
প্রথমে ইমরোজ কথা শুরু করলো।
---
= অাপনি কি জানেন অাপনাকে
একটা কথা বলার জন্য অাজকে দেখা
করলাম? ( ইমরোজ)
:- দেখো তুমি কি বলতে চাও, অামি
সেটা বুঝি, তবে অামার পক্ষে তা
সম্ভব না ? (জাহেদ )
= প্লিজ না বলবেন না, অামাকে
খালি হাতে ফিরিয়ে দিবেন না,?
:- দেখো এই ভালোবাসা
ব্যাপারটাতে আমি বিশ্বাস করি
না।?
= কেনো ?
:- তুমিতো জানো অামি ইমাকে
অনেক ভালবাসতাম আর সে কোন কারন
ছাড়াই একদিন আজেবাজে কথা
শুনিয়ে , আমার সাথে ব্রেক-আপ করে
তাই এখন আমার মনে একটা ধারণা
জন্মে গিয়েছে, আসলে ভালোবাসা
বলতে কিছু নাই। শুধুই একটা স্বার্থে
কাছে আসা মাত্র। স্বার্থ যখন শেষ
সম্পর্ক টাও তখন শেষ।?
= তাই বলে কি সবাই কে ইমার মতো
মনে করবেন।?
:- আমি বলছিনা সবাই একই রকম। কিন্তু
আমার সাথে যা ঘটেছে, এরপর আমি
বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি। যে
কারণে আমি হয়তো কাউকে আর
কখনো
বিশ্বাস করতে পারবো না।?
= আমাকে বিশ্বাস করেন, আমার কোন
স্বার্থই নেই। আমি শুধু আপনার পাশে
সারাজীবন থাকতে চাই। আর কিছু চাই
না?
:- দেখো আমি দেখতেও সুদর না,
আমার
ভেতর এমন কিছুও নাই যে আমাকে
তোমার ভালবাসতে হবে। তুমি বরং
অন্য কাউকে ভালোবাসো, সেটা
তোমার জন্য মঙ্গল হবে?
= ভালোবাসা কখনোই বাহ্যিক
সৌন্দর্য থেকে জন্মায় না। কখন কার
প্রতি মানুষের ভালোবাসা জন্মে
যায়, মানুষ নিজেও তা জানে না।?
:- বুঝার চেষ্টা করো, অামিতো ঠিক
মতো গুছিয়ে সুন্দর করে কথাও
বলতে
পারি না।?
= অাপনার গুছিয়ে কথা বলতে হবে না,
অাপনার এই অগোছালো কথা গুলো
অামার শুনতে অনেক ভালো লাগে,?
:- দেখো তুমি একদিন অামায় বলছিলে,
যে তোমার জীবন সঙ্গী হবে,
সে কিছু
পারুক না পারুক, কিন্তু তোমাকে গান
গেয়ে শুনাতে হবে, গল্প কবিতা
শুনাতে হবে। অামিতো এর কোনটাই
পারি না।?
= অামাকে অাপনার গান শুনাতে হবে
না, গল্প কবিতা শুনাতে হবে না, শুধু
অাপনার মুখে ভালোবাসি কথাটা
শুনতে চাই।?
:- এই মেয়ে চুপ একদম চুপ, অার একটা
কথা
বললে থাপ্পড় পারবো, তোমাকে
ভালোবাসা অামার পক্ষে
সম্ভব না। সেই কখন থেকে বুঝানোর
চেষ্টা করছি।
কিন্তু একটু বুঝার চেষ্টা করছো না কেন
---
জাহেদের ঝাড়ি শুনে ভ্যা করে
কেঁদে দিলো ইমরোজ ,
কেঁদে কেঁদে বললো সে , বিশ্বাস
করেন, আমি সত্যিই আপনাকে অনেক
ভালোবাসি। সেই অনেক অাগে
থেকেই , কিন্তু অাপনাকে বলার সাহস
পাইনি। অামি অাপনাকে কোনো রকম
স্বার্থ ছাড়াই
ভালোবাসি ।
জাহেদ তখন বলে, একটা কথা বারবার
শুনতে ভালো
লাগে না । তোমাকে ভালোবাসা
আমার পক্ষে কোন ভাবেই সম্ভব না ।
ইমরোজ তখন বলে, ওকে ঠিক আছে
আপনার আমাকে ভালবাসতে হবে না।
আমি না হয় শুধু আপনাকে
ভালোবাসবো। আপনি যদি চান, আমি
আর কখনোই আপনার সামনে আসবো
না,
অাপনার সাথে কোনদিন যোগাযোগ
করবো না।
আপনি ভাল থাকবেন ।
এই বলেই ইমরোজ কাঁন্না করতে
করতে
সেখান থেকে উঠে চলে যায় ।
----
সে উঠে চলে যাওয়ার সময় জাহেদের
বুকের ভেতরটা কেমন যেন মোচড়
দিয়ে
উঠলো । সে এক মিনিট নিরব হয়ে
থেকে ভাবতে লাগলো । সে বুঝতে
পারে এই মেয়ের চেয়ে বেশি
কেউ
কোনদিন তাকে ভালোবাসবে না ।
তার ভালোবাসাটা একদম সত্য । তার
ভালবাসার মাঝে কোন রকমের স্বার্থ
নেই । তার ভালোবাসা হলো
স্বার্থহীন ভালবাসা ।
তাই সে উঠে পিছন থেকে
ইমরোজের
নাম ধরে ডাক দিলো ।কিন্তু সে তার
ডাকে সাড়া না দিয়ে হেটে চলে
যাচ্ছে।
তখন জাহেদ দৌড়ে তার পাশে গিয়ে
পিছন থেকে ওর হাত টা ধরলো । সে
তখন কাঁন্না থামিয়ে চোখ দুটো
রসগোল্লার মত বানিয়ে জাহেদের
দিকে তাকিয়ে ছিলো।
জাহেদ তখন তার হাত ধরে টেনে
কাছে এনে অালতো করে তার
চোখের জলের ফোটা গুলো
মুছে দিয়ে
, কপালে একটা মিষ্টি চুমু এঁকে দিলো।
তারপর সে লক্ষ্য করলো তখনও তার
চোখ
দিয়ে টপ টপ করে জল গড়িয়ে পড়ছে
তাই একটু রেগে বলে , এই মেয়ে
তোমার চোখে কি কোন সমস্যা
অাছে
যখন তখন কেঁদে চোখের জল
ফেলছো
কেনো । আরে এখন আমি
বললামতো
ভালবাসি তোমাকে , এবার কাঁন্না
বন্ধ করো ।
তখন ইমরোজ বলে , অাপনি যদি অাদর
করে এভাবে অামার চোখের জল
মুছে
দেন ,তাহলে অামি সারাজীবন
এভাবে চোখের জল ফেলতে রাজি ।
ভালবাসি অাপনাকে বড্ড বেশি
ভালোবাসি ?
-----