বাংলা গল্প মায়াবতী Romantic Valobashar Golpo রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প
বাংলা গল্প মায়াবতী Romantic Valobashar Golpo |
গল্পঃ মায়াবতী
জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা
পর্বঃ৩
-কিহ! এটা তোমার ছবি না??
- না।
- তো কোন মেয়ের ছবি এটা??
- জানি না।
- অন্য মেয়ের ছবি চুরি করতে লজ্জা করে না তোমার। তুমি তো দেখি পেতনির সাথে সাথে চুন্নিও বটে।হা হা।
এবার মিশি খুব রেগে গেল। আর সাথে সাথে মেসেজ ব্লক দিয়ে দিল।এমন অসভ্য ছেলের সাথে কথাই বলবে না আর।
যাক বাবা, ব্লক ই দিয়ে দিলো আমায়। অবশ্য পেতনিদের সাথে আমারো কথা বলার ইচ্ছা নেই।
বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে নিশু। এমন সময় নিশুকে একটা সিগারেট বাড়িয়ে দিল তার বন্ধু। সিগারেটটা হাতে নিতেই নিশু মিশির কথা মনে হয়ে যায়। এই সিগারেট এর জন্য মেয়ে আমাকে নেশাখোর বললো।
এসব এসব মনে করতে করতে মনের অজান্তেই সিগারেটটা তার হাত থেকে পড়ে যায়।
মেয়েটার কথা যেন কিছুতেই নিশুর মাথা থেকে যেন যাচ্ছে না।
- মেয়েটাকে কেনো নিজের মাথা থেকে সরাতে পারছি না। এর আগে তো কখনোই এমন হয়নি আমার সাথে।
কিছুই ভালো লাগে না নিশুর এখন। সব সময় ছটফট করে তার মনটা। এটা থেকে নিস্তার পেতে চায়। তিন-চার দিন কথা বলে কি এমন হলো তার যে মেয়েটার সাথে কথা বলার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেছে।
যে মেয়ে তাকে পাত্তাই দেয় না তার সাথে কথা কেন বলবে। আবার ওই ছবিটাও তো তার না। তবে মনটাকে কেনো বুঝাতে পারতেছি না। অবশ্য পেতনিকে একবার দেখতে হবেই, পেতনি আসলে দেখতে কেমন হয়,, হঠাৎ নিশুর বোনের ডাকে ঘোর কাটে নিশুর।
- কিরে ভাইয়া, কার কথা ভাবছিছ??
- কারো কথা না,নয়ন।
- দেখে তো মনে হচ্ছে নতুন করে কোনো প্রেমে পরছোছ??
- আরে নাহ। ওসব প্রেম টেম আর করবো না। ভালো হয়ে গেছি আমি। এখন একবারে বিয়ে করবো।
- (ভেংচি কেটে) তা সময় বলে দেবে।
-এখন একবারে তোর জন্য মিষ্টি একটা ভাবি আনবো।
বলেই রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেল নিশু।
নিশুর একমাত্র আদরের ছোট বোনের নাম নয়না। নিশু তাকে ভালোবেসে নয়ন বলেই ডাকে। তার বোনের সাথে সবকিছুই শেয়ার করে নিশু।
মিশি পড়তে বসেছে। সে যেন জোর দিয়ে চাইছে যেন তার মন পড়ায় বসে। কিন্তু কিছুতেই আর পড়াই বসছে না। মাথাটা ভোঁ ভোঁ করছে তার। মাথাই তার একটা কথাই ঘোরছে, নিশুর সাথে কিভাবে তো ঝগড়া করলো সে। ব্যক্তিগত জীবনে কখনোই কারো সাথে এতো ঝগড়া করেনি সে। নেশাখোর বলা কি ঠিক হয়েছে তার।
হে, একদম ঠিক বলেছি, আমাকে পেতনি বলা। কিন্তু আমিই তো আগে নেশাখোর বলেছি তাকে। এসব দ্বিধাদ্বন্দ তার মাথায় ঘোরপাক খাচ্ছে।
-কিরে তোর পড়ার শব্দ শুনতে পারছি না আমি।
মায়ের এমন কথায় চমকে ওঠে মিশি।
-হ্যা, পড়তেছি।
বলে আবার পড়াই মন দেওয়ার চেষ্টা করলো মিশি।
চায়ের দোকানে দারিয়ে চা খাচ্ছিল অভি। হঠাৎ তার সামনে দিয়ে নীল শাড়ি পড়া একটা মেয়ে হেঁটে যাচ্ছে। পিছন থেকে দেখে মেয়েটিকে অপূর্ব লাগছিল। মেয়েটির দিকে তাকাতে তাকাতে গরম চায়ের কাপে চুমুক দিতে ঠোঁট পুড়ে ফেলে অভি। ঠোঁট পুড়ে যাওয়ায় অভি আহ! করে আওয়াজ করে।
সেই আওয়াজ শুনে পেছনে তাকায় মেয়েটি।
অভি মেয়েটির দিকে তাকাতেই তার ঠোঁট পুড়ার কথা ভুলে যায় সে। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তার মনে হচ্ছে, আকাশ থেকে কোন এক নীল পরী নেমে এসেছে। প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলে অভি মেয়েটিকে।
মেয়েটি তার দিকে ফিরে মুচকি হেসে চলে যায়। আর মেয়েটির দিকে অপলকভাবে তাকিয়েই আছে।
নিশু-পেত্নি মিশির সাথে একবার কথা বলা দরকার। যাকে এতোবার পেত্নি পেত্নি বলে ডেকেছি তাকে তো একবার দেখতেই হবে। কিন্তু সে তো আমাকে মেসেজে ব্লক দিয়ে রেখেছে, কিভাবে কথা বলবো??
অয়ন- আরে বন্ধু, তুই হচ্ছিছ প্লেবয়। তোর জন্য কতো মেয়ে পাগল। আর তুই ওই পেত্নি মেয়ের কাছে ক্ষমা চাইবি??
নিশু- ওই তুই পেত্নি ডাকিস কেন? পেত্নি শুধু আমি ডাকবো বুজছোছ। আর ওই মেয়েকে একবার দেখতেই হবে আমার না হলে আমার মনে শান্তি নেই। কি করব বল??
অয়ন- তুই একটা কাজ কর। সরি লিখে ওই মেয়ের আইডিতে পোষ্ট দে, আর সাথে ব্লকটা খুলে দিতে বল। হয়তো ব্লক খুলে দিতে পারে।
নিশু- ওকে। তাহলে তাই করি।
বলে পোষ্ট করলো মিশি আইডিতে।