বাংলা গল্প মায়াবতী বাংলা ভালোবাসার গল্প Bangla Valobashar Golpo, Bangla Love Story

বাংলা গল্প মায়াবতী, বাংলা ভালোবাসার গল্প, Bangla Valobashar Golpo, Bangla Love Story, রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প, valobashar golpo, ভালোবাসার গল্প, রোমান্টিক গল্প, premer golpo, romantic love story
বাংলা ভালোবাসার গল্প - Bangla Valobashar Golpo

গল্পঃ মায়াবতী
জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা
পর্বঃ১৫


মিশি বার বার নিশুকে ফোন দিচ্ছে কিন্তু নিশু ফোনটা বন্ধ করে রেখেছে। তাই মিশি নিশুর বন্ধু অয়নকে ফোন দেয়। অয়নকে জিজ্ঞেসা করে কি কারণে নিশু এমন করছে। কিন্তু অয়নের সাথে আজ অনেক দিন নিশুর দেখা না হওয়ায় অয়ন কিছু বলতে পারে না। শুধু এতোটুকুই বলে যে
- নিশু এমন কেন করছে জানি না কিন্তু আপনাকে ও অনেক ভালোবাসে।
মিশি অয়নকে বলে নিশুকে একটু বোঝানোর জন্য। যেন নিশু এমন করে কষ্ট না দেয় মিশিকে।

এ পর্যন্ত অনেক চাকরির জন্য এপ্লাই করেছে নিশু,অনেক ইন্টারভিউও দিয়েছে। কিন্তু কোন চাকরি হয়নি। আজ নতুন করে আবার চাকরির জন্য এপ্লাই করছে হঠাৎ কোম্পানির নামটা দেখে মনে পড়ে এই কোম্পানিতে তো অয়নও চাকরি করে। অয়নকে একবার বলে দেখলে হয়তো চাকরিটা নিয়ে দিতে পারে। এই আশায় নিশু অয়নকে ফোন দিয়ে সন্ধ্যায় দেখা করতে বলে।

মিশি সামান্য কিছু কারণ দেখিয়ে দেখিয়ে এতোদিন বিয়ের সমন্ধ ভেঙ্গে দিয়ে দিচ্ছিলো। কিন্তু মিশির বাবা এবার অনেক ভালো বিয়ের সমন্ধ নিয়ে আসে। পাত্র ভালো,সুন্দর প্রতিষ্ঠিত। মিশির বার বার বিয়ের সমন্ধ ভেঙে দেওয়ায় মিশির বাবা মিশির প্রতি কিছুটা অসন্তুষ্ট। তাই মিশির বাবা মিশিকে না জানিয়েই মিশির বিয়ে ঠিক করে ফেলে। মিশিকে না জানিয়েই ১ মাস পর মিশির বিয়ে ঠিক করে ফেলে। মিশিকে যখন তার বিয়ের কথা বলা হয় তখন মিশিও কোনো কারণ খুজে পাচ্ছে না বিয়ে ভাঙ্গার জন্য।
মিশি এখন কি করবে কিছু বুজতে পারছে না। নিশুকে জানাতে হবে কথাটা। কিন্তু কিভাবে, নিশু তো তার ফোনই ধরছে না।

সন্ধ্যায় অয়ন নিশুর সাথে দেখা করে। অয়ন নিশুকে প্রথমে চিনতেই পারি নি। যে ছেলে তার সামনে হ্যান্ডসাম সেজে ঘুরতো, যার চুলে হাত দেওয়া যেতো, হাত দিলেই রাগ ওঠে যেত। যার কোন টেনসন ছিলো না, রাজার হালে চলতো তার বন্ধুর আজ এই অবস্হা দেখতে হবে তা অয়ন কখনো ভাবতেও পারে নি। নিশুকে দেখে বললো অয়ন
- কিরে বন্ধু! তোর এ কি অবস্থা?
- (একটু হাসার চেষ্টা করে) বাস্তবতা সবকিছু শিখিয়ে দেয়। কেমন আছিস?
- এইতো ভালো। তুই?
- হুম আছি।
- তোর বাবা-মা কেমন আছে?
- ভালো।
- এতোদিন পর আজ হঠাৎ এভাবে ডাকলি কোনো প্রয়োজন আছে?
- হুম কিন্তু কথাটা কিভাবে বলবো বুজতে পারছি না। একটু সাহায্য লাগবে তোর।
- তুই আমার কাছে সাহায্য চাইতে লজ্জা পারছিস?( অভিমান সুরে) এই আামাদের বন্ধুত্ব?
- না মানে, তোর কোম্পানিতে একটা পোষ্টে এপ্লাই করছি। তুই যদি কোনো একটা ব্যবস্হা করে চাকরিটা আমাকে নিয়ে দিতে পারিস খুব উপকার হতো? আমার এখন একটা ভালো জবের খুব দরকার।
- এই কথা বলার জন্য তুই এতো লজ্জা পাচ্ছিলি? তুই কোনো চিন্তা করিস না আমি বসের সাথে কথা বলবো।
- বড় উপকার করলি বন্ধু, থ্যাংকস।
- বন্ধুদের মধ্যে আবার থ্যাংকস কিসের?
ও আর একটা কথা মিশি আমাকে ফোন দিয়েছিলো।
- কিহ! কেন ফোন দিয়েছিলো?
- তুই নাকি ওর সাথে ব্রেকআপ করে দিছিস?
- হুম।
- কেন? তুই না মিশিকে অনেক ভালোবাসিস, তাকে ছাড়া বাচঁবি না বলতি আমায়। আজ হঠাৎ ব্রেকআপ করে দিলি? মেয়েটাকে অনেক কান্না করতে ছিলো ফোনে কথা বলার সময়।
- হুম। দেখ আমার এখন কি অবস্থা তুই ভালো করেই জানিস। ভালো চাকরি নেই। ৩ বেলা ভালো করে খেতে পারি না। আমি চাই না মিশি আমার সাথে নিজের জীবনকে জড়িয়ে ওর জীবনটা নষ্ট করুক। আমি চাই ও ভালো একজনকে বিয়ে করে সুখে থাকুক।
- একজনকে ভালোবেসে অন্য কাউকে বিয়ে করা যায়?
- হুম। প্রথমে মিশির একটু কষ্ট হলেও বিয়ের পর সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।
- আর তুই? তুই বাচঁতে পারবি তো মিশিকে ছাড়া?
- হ্যা। তুই জানিস না আমি তো ২দিন পর পর নতুন প্রেমে পড়ি আমি নাহয় আর একটা মেয়েকে পটিয়ে নিবো।
বলতে বলতে নিশুর চোখের জল এসে যায়।
- তোর চোখের জলই বলে দিচ্ছে তুই কিভাবে বাঁচবি।
- দেখ, আমি এখন মিশির ভালো চাই। আর কোন বাবা-মাই তার মেয়েকে আমার মতো ছেলের হাতে তুলে দিবে না। তুই প্লিজ মিশিকে আর কিছু বলিস না। ওর ফোনও ধরিস না প্লিজ। প্রমিস কর?
- হুম, প্রমিস। তবুও আর একবার ভেবে দেখিস। আসি।

Next Part