বাংলা গল্প মায়াবতী ভালোবাসার গল্প Valobashar Golpo রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প, রোমান্টিক গল্প


বাংলা গল্প মায়াবতী, ভালোবাসার গল্প, Valobashar Golpo, রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প, রোমান্টিক গল্প, romantic valobashar golpo, romantic golpo, valobashar golpo bangla
ভালোবাসার গল্প - Valobashar Golpo

গল্পঃ মায়াবতী
জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা
পর্বঃ১১


নিশু একবছরে আগের থেকে অনেক দায়িত্বশীল হয়ে গেছে। একটা পার্টটাইম জব করে, বিভিন্ন জায়গায় জবের জন্য এপ্লাই করেছে,অনেক জায়গায় ইন্টারভিউও দিয়েছে। একটা ভালো চাকরি হলেই সে মিশির বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে পারবে সে আশাই সে অনেক কষ্ট করছে।

দুদিন ধরে নিশুর সাথে ভালো করে কথা হয় না মিশির। নিশু কক্সবাজারে গেছে ৭ দিনের ট্রিপে। অবশ্য মিশির অনুমতি ছাড়া যায় নি।নিশু ইদানীং কতো ব্যস্ত থাকে তা মিশি ভালো করেই জানে। এসব থেকে একটু ব্রেক নেওয়ার দরকার নিশুর। তাই অনুমতিটা দিয়েছে মিশি। নিশু এটাও বলেছে যে ৭ দিন ঠিকমতো কথা বলতে পারবে না। যেখানে মিশি একদিনো নিশুর সাথে কথা না বলে থাকতে পারে না, আর সেখানে আজ ২ দিন হয়ে যাচ্ছে। তবে নিশুর জন্য সে ৭ দিন কষ্ট করে নিবে।

একসাথে বসে গল্প করছে অভি আর নয়না।
নয়না অভির হাতে হাত রেখে অভির কাঁধে মাথা রাখলো।
- অভি, আমায় বিয়ে করবে কবে? বাবা আমার বিয়ের জন্য ছেলে খোজা শুরু করে দিয়েছে।
- তুমি চিন্তা করো না। আমি মাস্টার্স ফাইনাল দিলেই আমার জব হয়ে যাবে। আমার মামার কোম্পানিতে জয়েন করবো। খুব ভালো বেতনের চাকরি। চাকরিটা হলেই তোমার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবো। তুমি শুধু কিছুদিন অপেক্ষা করো।
- হুম।
দুজন একসাথে বসে আকাশ দেখছিলো।

তবে আড়াল থেকে তাদের এই দৃশ্য দেখে ফেলে নয়নার বাবা মি. রহমান। রাগের আগুনে পুড়ে যাচ্ছিলো তিনি। ইচ্ছে করছিলো নয়নাকে একটা জোরে থাপ্পড় দিতে। তার মান সম্মান সব মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে মেয়েটা। তবে এখানে কিছু করতে গেলে তামাশা হবে তার। তাই তখন কিছু বললেন না তিনি চলে যান বাসায়।
বাসায় গিয়ে নয়নার মাকে সব বলেন তিনি, তার মাকে অনেক বকাবকিও করে।

কিছুক্ষণ পর নয়না বাসায় যায়। হঠাৎ তার বাবা তাকে ডাক দেয়। তার বাবার কন্ঠ শুনেই সে বুঝতে পারে যে তার বাবা রেগে আছে।
- এতোক্ষণ কোথায় ছিলে? এতো দেরি হলো কেন আসতে?
- বাবা, আসলে ভার্সিটি শেষে বন্ধুদের সাথে একটু আড্ডা দিয়েছিলাম তো তাই দেরি হয়ে গেছে।
এবার রহমান সাহেব নয়নাকে একটা ঠাস করে চড় মারে আর বলে,
- মিথ্যেবাদী। তুমি কার সাথে এতোক্ষণ আড্ডা দিচ্ছিলে তা আমি দেখে এসেছি। তোমার লজ্জা করলো না এভাবে বাহিরে একটা ছেলের হাত করে বসে থাকতে। আমার মান সম্মান সব ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছো তুমি।
নয়না বুজতে পারলো তার বাবা তাদের একসাথে দেখে ফেলেছে।
- বাবা তুমি আমায় ভুল বুঝো না। ও অভি ছিলো। আমরা একে অপরকে খুব ভালোবাসি।
- ভালোবাসা! আমার মান সম্মান ডুবিয়ে এখন ভালোবাসা। শুনো আগামী চারদিন পর তোমার বিয়ে। আমার বন্ধুর ছেলে রিফাত তোমাকে পছন্দ করছে।
- কিন্তু বাবা আমি এ বিয়ে করতে পারবো না। আমি অভিকে ভালোবাসি।
- তোমার মতামত আমি জানতে চাই নি।
এ বলে মি. রহমান নয়না হাত থেকে তার ফোনটা নিয়ে নেয়। আর নয়নাকে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে তার রুমে বন্ধ করে দেয়।

নয়না চিৎকার করে বলছে বাবা আমার কথা একবার শুনো? তুমি এইভাবে আমার বিয়ে দিতে পারো না। মি. রহমান কোনো কথায় শুনলেন না। সোজা দরজা বন্ধ করে তাতে তালা লাগিয়ে দেয়। আর নয়নার মাকে ভালো করে শাসিয়ে যে দরজা যেন না খোলেন তিনি। আর সাথে এটাও বলেন নিশুকে কিছু না বলতে, যখন সময় হবে তখন তিনিই বলবে বিয়ের কথা নিশুকে।

মি. রহমান ভালো করেই জানে যে নিশু এসব জানলে নয়নার মতামত ছাড়া এ বিয়ে হতে দিবে না নিশু। তাই নিশুকে এখন জানানোর কোনো দরকার নেই।

ঐদিকে নয়না কেঁদেই যাচ্ছে। কি করবে এখন সে? অভিকে কিভাবে জানাবে সে এসব? ভাইয়াও বাসায় নেই, তার ভাই থাকলে এভাবে জোর করে বাবা বিয়ে দিতে পারতো না। আমার পোড়াকপাল আমি কেন ভাইয়াকে অভি আর আমার ব্যাপারে বলিনি। বললে হয়তো আজ এই দিন দেখতে হতো না আমার। আমার ফোনটাও বাবা নিয়ে গেছে, কিভাবে কথা বলবো অভির সাথে। অভিকে ছাড়া অন্য কেউকে বিয়ে করতে পারবো না আমি।

Next Part