উদাহরণ দিতে গিয়ে অনেকে বলেন, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হলো সরকারি চাকরির মতো। বড় কোনো ভুল না করলে যেমন সরকারি চাকরি যায় না, তেমনি বড় ধরনের কোনো ভুল বোঝাবুঝি না হলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কও ছিন্ন হয় না।

যেসব কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি বাড়ে


ছোটখাটো ঝড়-ঝাপটা অনায়াসে সহ্য করে নেয় এই হৃদয়বন্ধনী। তবে নিম্নচাপ যখন ঘূর্ণিঝড় হয়ে এর ওপর হামলা চালায়, তখন কেউ আর টিকতে পারে না। প্রবল প্রতিরোধের সামনে মাথা তুলে দাঁড়াতে গিয়ে ভেঙে যায়।


চলুন তবে এক নজরে জেনে নেয়া যাক কী কী কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে এবং ওই পরিস্থিতিতে করণীয়ই বা কী হতে পারে।


অন্য কাউকে ভালো লাগা

একটা সম্পর্কে থাকাকালীন সময়ে অন্য কাউকে ভালো লাগলেই সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি তৈরী হয়। স্ত্রী যেমন তার স্বামীর সঙ্গে অন্য মেয়ের সম্পর্ক মানতে বা  সহ্য করতে পারেন না, স্বামীও তেমনি স্ত্রীর সঙ্গে অন্য পুরুষের সম্পর্ক মানতে বা  সহ্য করতে পারেন না।


তা থেকেই ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। তাই এক্ষেত্রে সমাধান হলো- স্বামী-স্ত্রী একে অন্যকে ভালোবাসুন, বিশ্বাস রাখুন, অন্য কারও মোহে পড়ে সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে ঠকানো থেকে বিরত থাকুন।


কোনো কিছুর সমাধান না করা

যেকোনো সমস্যার সমাধান না হলে সঙ্গী অনেক বিরক্ত হন। রাগ করেন‌। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের দাবি, কিছু বিষয়ে অবস্যই একটু সময় দিতে হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই সমস্যার সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়। তাই সবসময় বিরক্ত বা রাগ না করাই উত্তম।


স্বাধীনতা

সম্পর্কের মধ্যে থেকেও স্বাধীনতা থাকা জরুরি। অনেকেই এতে বিশ্বাস করেন না। বরং স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার ফলে সম্পর্কে জটিলতা তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞদের কথায়, সম্পর্কে থাকলেও সঙ্গীকে স্বাধীনতা দেওয়া ভালো।


স্বাধীনতা বলতে এটা নয় যে, সঙ্গী বা সঙ্গিনী যেভাবে খুশি সেভাবে চলাফেরা করতে পারবেন। সেটা বরং একটা সম্পর্ককে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। এটা আদতে স্বাধীনতা নয়। স্বাধীনতা বলতে, একে অন্যের পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব দেয়া। সিদ্ধান্ত চাপিয়ে না দেয়া, মতামতের গুরুত্ব দেয়া ইত্যাদি।


আর্থিক দিক

সম্পর্কের বোঝাপড়া অনেক ভালো থাকলেও দুজন দুজনের সব আর্থিক ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করাই ভালো।‌ এতে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। অনেক সময় এর থেকে ভুল বোঝাবুঝিও বেড়ে যায়।


এ ধরনের কোনো সমস্যা হলেই সঙ্গী বা সঙ্গিনী একা থাকতে চায়। কিছু সময় বা কিছুদিন। কথাও বন্ধ করে দেয় এই সময়। অনেকে মনে করেন এতে সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। কিন্তু কিছু সময় একা থাকাও অনেক জরুরি। এতে তেমন খারাপ কিছু নেই বলে মত মনোবিদদের।


পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কখনো কোনো ঝামেলা হলে তারা নিজেরাই যে যার ভুল বুঝে সমস্যা মিটিয়ে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। ইগোকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে ছাড় দেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে উভয়েরই। তাহলে সংসারের সব ধরণের ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি সহজেই এড়ানো যাবে।

dh