Bangla Golpo (চলো পালাই) Romantic Story | Bangla Love Story

গল্পঃ চলো পালাই
পর্বঃ এক
লেখাঃ অধরা জেরিন


হাতে অনেক গুলি ঘুমের ঔষধ নিয়ে বসে আছি । শুনেছি ঘুমের ঔষধ খেলে মানুষ মরে যায় । তাই আমিও মরে যেতে চাই। কি হবে বেঁচে থেকে । কাল আমার বিয়ে । মফিজের সাথে । যদিও ছেলে টার নাম মফিজ নয়
। কিন্তু আমার কেন যেন ছেলে টাকে দেখেই মফিজ মফিজ মনে হয়েছে । এর এই নায়কের মতো চেহারা মফিজের সাথে আমার দাদু আমাকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছে । জানি না এই মফিজ কে কোথা থেকে দাদু জোগাড় করেছে । ঘুমের ঔষধ গুলি অনেক কষ্ট করে জোগাড় করেছি। আচ্ছা আমি যদি ঘুমের ঔষধ গুলি খাওয়ার পর না মরি তাহলে ??
আরেক টা কাজ করা যায় । ছাঁদ থেকে লাফিয়ে পড়া। কিন্তু তাতে ও একটা সমস্যা আছে । আমি ভাল করে দুরের জিনিস দেখতে পাইনা। যদি ছাদে উঠে নিচের কিছু দেখতে না পাই। তাহলে কোথায় লাফ দেব। নাহ এভাবে ও না। তাহলে অন্য উপায় বের করতে হবে । আচ্ছা আমি চাইলে কোনও নতুন পদ্ধতিতে আত্মহত্যা করতে পারি। কিন্তু কিছুতো মাথায় আসছে না। কি করা যায় ?? চোখ বন্ধ করলেই মফিজের সেই পান খাওয়া দাঁতের বাজে হাসির কথা মনে পড়ছে । আমাকে দেখে হেসে হেসে বলেছিল অধরা তুমি গান গাইতে পারো। আমার দাদু চট করে উওর দিল গান গাইতে পারে মানে সাবিনা ইয়াসমিন রুনা লায়লা ফেল। কেমন যানি আমার দাদু কান খাড়া করে বসে ছিল মফিজ কখন প্রশ্ন করবে আর তিনি উওর দেবে।

আমার নাম অধরা । মাত্র এইস এস সি শেষ করলাম । আমার দাদু ভিষন রাগী মানুষ । যা বলবেন তাই। আগের কালের দারোগা ছিলেন । খুব দাপটে চলেছেন । আমার বাবা চাচা খুব ভয় পায় । কারো সাহস নেই তার মুখেরউপরে কথা বলার । আর যে মফিজের কথা বলছি সে হচ্ছে আমার দাদুর ছোট বেলার বন্ধুর চাচাতো ভাইয়ের খালাতো বোনের ননদের ছেলে । কিছু দিন আগে দারোগা হয়েছে । কিন্তু সব ভাল । শুধু ছাগলের মতো পান খেতে ভাল বাসে। এই নিয়ে আমার দাদুর কোনও আপত্তি নেই। সে বলে পান না খেলে দারোগা দারোগা মনে হয় না।

আমাকে দেখে তার পছন্দ হয়েছে । আর দাদু যেহেতু রাজি তাই বাবা মায়ের কোনও কথা বলার সাহস নেই । এই জন্যই আমি এখন মরতে চাইছি। কি লাভ এই জীবন দিয়ে যেখানে নিজের ইচ্ছের কোনও দাম নেই।

এমন সময় পাশের বাসা থেকে চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ এলো। আমি কি হয়েছে দেখার জন্য বাইরে বের হলাম । মরার আগে দেখে যেতে চাই সমস্যাটা কি। এর ভিতরে ছোট বোন টা হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বললো জানিস অধরা আপু পাশের বাসার রিতা আপু তাঁর বয়ফ্রেন্ড্ এর সাথে পালিয়ে গেছে । তাকে জোর করে অন্য জায়গায় বিয়ে দিচ্ছিল বলে।
কথা টা আমার খুব মনে ধরলো। আচ্ছা আমি ও বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে পারি। কিন্তু আমার কোনও বয়ফ্রেন্ড্ ও নেই। তাহলে এখন উপায় ??

উপায় তো কিছু একটা বের করতেই হবে । এখনও হাতে একদিন সময় আছে । তার থেকে একটু ফেসবুক থেকে ঘুরে আসি। মরার আগে একবার ফেসবুক চালাতে কোনও সমস্যা হবে না । কিন্তু ফেসবুক এ ঢুকলে আমার মেজাজ খুব খারাপ হয়। সবাই কতো সুন্দর করে বয়ফ্রেন্ড্ দের সাথে কথা বলে । আর আমার সেই ভাগ্য ও নেই। বিদায় ফেসবুক । কি হবে আর বেচে থেকে । এমন সময় হঠাত্ করে একটা মেসেজ ,,,,,

-- hi
.
-- hlw
.
-- ki Mon kharap ?
.
-- ke apni?
.
-- tomar akta fd...amake Chinbe na .
.
-- oh .. ta hole kno text korcen ?
.
-- amar Mon ta vison kharap golpo korar jonno....
.
-- golpo korar jonno mane amake chinen ??
.
-- hmm chini to ..
.
-- chenen ?? ke ami bolen too...
.
-- tumi odhora. . khub misti akta maye . ..
.
-- kintu apni k ??
.
-- ami alif .. tomar fd vabte paro
.
এতো টুকু কথা বলেই ছেলে টা অফ লাইনে চলে গেল । ধুর কে ছিল ছেলে টা । ভালই লাগছিল কথা বলতে । এমন সময় আমার দাদুর আগমন । আমাকে বললো কি করে আমার দাদু ভাই ? দাদু কে দেখেই মেজাজ একে বারে গরম হয়ে গেল । মনে হচ্ছিল গুলি করে মারি। আমাকে বললো নিশান ফোন করেছিল । তোমার কি রঙের বিয়ের শাড়ি কিনবে তাই শুনতে । আমি বললাম নিশান টা আবার কে ? কিন্তু পরে মনে পড়লো নিশান হচ্ছে সেই মজিফের নাম । আমি কিছু না বলেই চুপ করে রইলাম । দাদু আবার বললো ঠিক আছে আমি তোমার জন্য লাল টুকটুকে একটা শাড়ি কিনতে বলি তোমাকে খুব ভাল লাগবে । এই বলে দাদু হাসতে হাসতে চলে গেল ।

ঢং তাহলে আমাকে কেন জিজ্ঞাসা করতে আসতে হলো। নিজেই বললেই তো হতো। নাহ্ আর না । এবার পালাতে হবে । সোজা সিলেট । রিতার কাছে । আমার ছোট বেলার বন্ধু । অনেক দিন ধরে বলছে ওদের বাসায় যেতে । ঠিকানা ও আছে আমার কাছে । আগে পালাই । কিছু দিন পর ফিরবো। এর ভিতরে দাদুর মাথা থেকে বিয়ের ভুত নেমে যাবে। কিন্তু যাওয়ার আগে মা কে শুধু বলে যাবো । মা ছাড়া আমার কষ্ট কেউ বুঝবে না ।

হুম সবই তো বুঝতে পারছি । কিন্তু তোর দাদু যে রাগি বাড়িতে যুদ্ধ শুরু করবে । আচ্ছা মা তুমি কি চাও তোমার এই ফুটফুটে মেয়ে টা মরে যাক। আর কিছু শুনবো না। আমি আজ রাতেই সিলেট চলে যাচ্ছি । রিতার কাছে । ওকে সব বলেছি ফোনে । তুমি কোনও চিন্তা করো না । শুধু বাবাকে একটু বলো । কোনও চিন্তা না করতে ।

রাতে মা কিছু টাকা আর একটা বোরকা এনে দিল। বললো এইটা দিয়ে ভাল করে মুখটা ঢেকে রাখবি। সবাই তাহলে তোকে বয়স্ক মানুষ মনে করবে । আর তাতে তুই নিরাপদ থাকবি। আহ কি শান্তি । কেমন যেন মনে হচ্ছে আমি পৃথিবী জয় করতে যাচ্ছি । যাওয়ার আগে মা আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বললো একটু সাবধানে যাস। আর যেয়ে ফোন করিস।

আমি গাড়িতে উঠে বসেছি। একটু পর গাড়ি ছেড়ে দিবে । অবশ্য বোরকা টা পড়ে ভালই হয়েছে কেউ কোনও খারাপ চোখে তাকাচ্ছে না। আরো সম্মান করছে। এতো সময় পুরো বাড়িতে হয়তো আমাকে খোঁজা শুরু করেছে। দাদু হয়তো এতোখন এ চিৎকার শুরু করে দিয়েছে আমার বন্দুক কোথায় ? ওকে আমি খুন করে ফেলবো ।
মা কি করছে কী জানি ?
এর ভিতরে ছোট চাচার ফোন । আমি ভয়ে ভয়ে রিসিভ করলাম । ছোট চাচা বললো অধরা গাড়ি তে উঠেছিস ? সাবধানে থাকিস। কোনও চিন্তা করিস না । আমি সব সামলে নিব। আমি বললাম তোমরা ও চিন্তা করো না। আমি পৌছে ফোন দেব।

সত্যি সবার জন্য খারাপ লাগছিল । আমাকে কতো ভালবাসে । আর আমি সবাই কে ছেড়ে মরতে চলে ছিলাম ।

চাচি একটু সরে বসবেন ? এটা আমার ছিট। আপনার ছিট পাশের টা।

আমার সামনে একটা ছেলে দাড়িয়ে । কিন্তু সে আমাকে চাচি বলছে । আমার ভিষন রাগ হলো ছেলে টার উপরে। আমি রেগে গিয়ে বললাম কি বললেন আপনি ?? আমি চাচি ?? আমাকে দেখে আপনার তাই মনে হচ্ছে ?? দেখুন সাবধানে কথা বলবেন । আমার নাম অধরা । আমাকে এতো টা নরম মনে করবেন না ।

ছেলে টা হা করে আমার কথা শুনতে লাগলো । মনে হচ্ছে আগে কোনও দিন মানুষের কথা শুনেনি ।

পর্ব ২